প্রচারে এগিয়ে খোরশেদ আলম চৌধুরী, চমক দেখাতে পারে সিরাজুল ইসলাম
জমির উদ্দিন, লোহাগাড়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
চতুর্থ ধাপে চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচন আগামী ৫ জুন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। নির্বাচনে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে ৩ প্রার্থী থাকলেও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খোরশেদ আলম চৌধুরী (আনারস প্রতীক) ও চুনতি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক দুইবারের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী (ঘোড়া প্রতীক) মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে মনে করা হচ্ছে একাধিক সূত্রে । তারা দু’জনই জয়ের ব্যাপারে বেশ আশাবাদী। অপরদিকে লন্ডন প্রবাসী মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মাবুদ সৈয়দ (মোটর সাইকেল প্রতীক) ও উন্নয়নের নানা প্রতিশ্রুতি নিয়ে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।
সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জিয়াউল হক চৌধুরী বাবুল এর মৃত্যু সহ নানা কারণে এবার বেশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে এই উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকেই সর্বশক্তি নিয়ে মাঠে নামে উপজেলা আওয়ামীলীগ ও আওয়ামী লীগের অংগসংগঠনের নেতৃবৃন্দগণ খোরশেদ আলম চৌধুরীর পক্ষে। অন্যদিকে প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে সাধারণ ভোটারদের মন জয় করতে সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন।
ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়,খোরশেদ আলম চৌধুরী ও সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী এই দুই প্রার্থী বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত ভোটারদের মন জয় করতে মরিয়া হয়ে মাঠে কাজ করছেন।পাশাপাশি তারা প্রয়াত জিয়াউল হক চৌধুরী বাবুলের একটি নিজস্ব ভোট ব্যাংক রয়েছে তা ভাগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন বলে জানান সাধারণ জনগণ।
গত ২০ মে জেলা রিটার্নিং অফিসার কার্যালয় থেকে প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে যে প্রচারাভিযান শুরু হয়।ছিল আচরণবিধি ভঙ্গের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ ও জরিমানা।পাশাপাশি ভোটারদের মন জয় করতে তারা দিচ্ছেন এলাকার প্রধান সমস্যা সমাধান সহ নানা প্রতিশ্রুতি।সব মিলিয়ে চট্টগ্রাম-লোহাগাড়া উপজেলার নির্বাচন প্রচারকাজে ছিল টানটান উত্তেজনা। তাই এই নির্বাচনকে ঘিরে পুরো চট্টগ্রামের মানুষের মধ্যে এক ধরনের আগ্রহ তৈরি হয়েছে।প্রচারে এগিয়ে খোরশেদ আলম চৌধুরী, চমক দেখাতে পারে সিরাজুল ইসলাম।কে হাসবেন শেষ হাসি ? বুধবার রাতের মধ্যেই জানা যাবে নির্বাচনের ফল।
নির্বাচনকে সামনে রেখে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে বলে জানান, উপজেলা প্রশাসন। প্রচারাভিযান শুরু থেকে আজ শেষ পর্যন্ত ভোটের দিনের কৌশল নির্ধারণে প্রার্থীদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেছেন।নির্বাচন কমিশনের বিধি-বিধান বা পরিপত্র মেনে উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ভোট কেন্দ্রে বা বাইরে ভয়ভীতি প্রদর্শন করা যাবে না। সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে যা যা করা দরকার তা-ই করবে বলে জানান লোহাগাড়া উপজেলা প্রশাসন। পাশাপাশি নির্বাচন-সংশ্লিষ্ট সকলের সাথেও একাধিক বৈঠক করে ব্যস্ত সময় পার করেছেন বলে জানান তাঁরা।
ঘোড়া প্রতীক প্রার্থী সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী মুঠোফোন বলেন,নির্বাচনের শুরুতে তেমন একটা সমস্যা ছিল না।তবে এখন ‘যেভাবে তাঁর সমর্থকদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে তাতে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট হবে কিনা সংশয় রয়েছেন তিনি। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বিজয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী তিনি। কারণ সারা লোহাগাড়ায় পর্যালোচনা করে এবং আমার অতীত ইতিহাস ও সামাজিক কর্মকান্ড দেখে মানুষ আমাকে ভোট দিবে।এছাড়া তিনি সাংবাদিকদের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন।
আনারস প্রতীকের প্রার্থী খোরশেদ আলম চৌধুরীর কাছে হুমকি ও দমকির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি অস্বীকার করেন। বরং উল্টো অভিযোগ করে তিনি বলেন সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী পার্বত্য এলাকা লামা, আলীকদম, কেয়াজুর পাড়া থেকে লোক এনে জনসমাগম করতেছে। যাতে ভোটের দিন গন্ডগোল করে সাধারণ লোকের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করার জন্য।
এছাড়া তাঁর কোন অভিযোগ থাকলে আমার কর্মী সমর্থকদের বিরুদ্ধে তাহলে সরাসরি নামসহ বলতে বলেন।
এছাড়া তিনি বলেন,আমি রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান। যুগ যুগ ধরে আমার পরিবার লোহাগাড়ার মানুষের পাশে ছিল সুখে দুঃখে । অনুরূপভাবে একটি আধুনিক এ স্মার্ট উপজেলা ঘটার প্রত্যয়ে আমি
দীর্ঘদিন ধরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছি। প্রচার-প্রচারণা ও গণসংযোগ করে বুঝতে পারছি এবারের নির্বাচনে অভূতপূর্ব সাড়া পাওয়ায় উৎসবমুখর পরিবেশে আনারস মার্কায় ভোটাধিকার প্রয়োগ করে বিপুল ভোটে তাকে জয়ী করবে বলে শতভাগ আশাবাদী জানান তিনি।
উল্লেখ্য, উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে ৭১টি কেন্দ্রের মোট ভোটার ২ লাখ ২৩ হাজার ৬২৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ১৯ হাজার ১০৮ জন ও মহিলা ভোটার ১ লাখ ৪ হাজার ৫১৮ জন। এবারের লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাচনে ৩ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী, ৩ জন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ও ২ জন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী রয়েছে ।