কোমরে রশি বেঁধে ইউনিয়ন পরিষদে ইয়াবায় অভিযুক্ত নারী—
শারিরিক নির্যাতনের পর মোবাইল কোর্টের নামে টাকা আদায়ে মুক্তি
নিজস্ব প্রতিনিধি ( কুতুবদিয়া)
কুতুবদিয়ার ৫৫ বছরের ফরিদা বেগম। ঈদের দিন স্থানীয় ইউপি সদস্য আবুল বশর প্রকাশ ভোলাসহ কয়েকজন মিলেই হঠাৎ বাড়ী তল্লাশি করে। ইয়াবা না পেলেও হাতে রশি বেঁধে তাঁকে খলিলুর রহমানের দোকানে নিয়ে আসা হয়। সেখানে পুলিশের অপেক্ষায় ছিল। কিছুক্ষণ পর তিন সদস্যের একটি পুলিশের দল উপস্থিত হয়। তারাও বৃদ্ধ ফরিদা বেগমের বাড়ীটি তল্লাশি করে। কিছু না পাওয়ায় তারা ফিরে গেলে ও কিন্তু ফরিদা বেগম বাড়ীতে ফিরে নি। তাকে ওই ইউপি সদস্যের গঠিত বাহিনী দিয়ে কোমরে রশি বেঁধে নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ। সেখানে দীর্ঘক্ষণ চলে শারীরিক নির্যাতন। অতীতে ইয়াবাসহ আটক হয়ে জেল কাটেন ফরিদা বেগম। সেটিকে ইস্যু করে এক পর্যায়ে উপজেলা প্রশাসনের (ওসি ও ইউএনও) নাম ভাঙ্গিয়ে চেয়ারম্যানের নির্দেশে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে ইউপি সদস্য আবুল বশর প্রকাশ ভোলা। এতে ১ লাখ টাকার বিনিময়ে মুক্তি পায় ফরিদা বেগম। তিনি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের জন্য আদালতে অভিযোগ করেন এমনটিও জানালেন। ফরিদা বেগম কুতুবদিয়া উপজেলা কৈয়ারবিল ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের ফকিরা মসজিদের বেড়ীবাঁধ সংলগ্ন এলাকার মৃত আব্দুল রশিদের স্ত্রী।
স্থানীয়রা জানান, ফরিদা বেগম ইয়াবা বিক্রি করে। তার বিরুদ্ধে মাদক মামলাও রয়েছে। তিনি ইয়াবাসহ আটক হলে তাকে ছেড়ে দেয়া হলো কেন?
অভিযুক্ত কৈয়ারবিল ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আবুল বশর প্রকাশ ভোলা এবিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হয়নি। তবে, মোবাইল কোর্ট পরিচালনার বিষয়টি অস্বীকার করে কৈয়ারবিল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি আজমগীর খান মাতবর বলেন, ফরিদা বেগম মিথ্যা বলেছে। তাকে নির্যাতন করা হয়নি। তবে, ২০-২৫ হাজার টাকা নেয়া হয়েছে বলে জানান।
কুতুবদিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, ফরিদা বেগম আদালতে মামলা করেছেন। মামলার ভিত্তিতে আদালত এ ঘটনার সঠিক তদন্তের জন্য নির্দেশ দেন বলে জানান তিনি।
অভিযুক্ত ইউপি সদস্য আবুল বশর প্রকাশ ভোলার সাথে বারবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে তার বক্তব্য পাওয়া গেলে প্রকাশ করা হবে।