IMEI পরিবর্তন করে চোরাই মোবাইল কেনা-বেচা করা চক্রের ০৩ সদস্য গ্রেফতার
নিজস্ব প্রতিবেদক
২ এপিবিএন, বাংলাদেশ পুলিশের অধিনায়ক (অতিরিক্ত ডিআইজি) জনাব আলী আহমদ খান মহোদয়ের সার্বিক দিক নির্দেশনায় অপস্ এন্ড ইন্টেলিজেন্স শাখার অভিযান সিসি নং-১১/২৪, জিডি নং-৮৪/২৪, তারিখ-২৫/০৩/২০২৪ খ্রিঃ মূলে এসআই(নিঃ) সৈয়দ আসাদুজ্জামান সঙ্গীয় অফিসার ও ফোর্সসহ ময়মনসিংহ জেলার মুক্তাগাছা থানা এলাকায় বিশেষ অভিযান করাকালীন ইং ২৫/০৩/২০২৪ তারিখ ১৯.৪০ ঘটিকার সময় উক্ত থানাধীন মধ্যহিস্যা মোড় অবস্থান কালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, বড়হিস্যা বাজারস্থ পৌরসভা মার্কেটের সামনে কতিপয় ব্যাক্তি চোরাই মোবাইল কেনা-বেচা করছে। উক্ত সংবাদ প্রাপ্ত হয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করে সংবাদের সত্যতা যাচাই এবং আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সঙ্গীয় অফিসার ফোর্সসহ ময়মনসিংহ জেলার মুক্তাগাছা থানাধীন বড়হিস্যা বাজারস্থ পৌরসভা মার্কেটের জনৈক মোঃ শফিক আহম্মেদ শান্ত’র মোবাইল সিটি নামক দোকানের সামনে ইং ২৫/০৩/২০২৪ তারিখ ১৯.৪৫ ঘটিকার সময় ১। সাব্বির মির্জা(২৪), পিতা- জয়নাল আবেদীন মির্জা, মাতা- হাসিয়া খাতুন, সাং- নন্দী বাড়ী, পৌরসভা ০৮ নং ওয়ার্ড, থানা- মুক্তাগাছা, জেলা- ময়মনসিংহ’কে ধৃত করে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে সে স্বীকার করে যে তার কাছে চোরাই মোবাইল আছে। উক্ত মোবাইলের মধ্যে কিছু সংখ্যক মোবাইল ২নং আসামী মোঃ রাসেল আহম্মেদ(৩০), পিতা- মোঃ জিন্নাত আলী, মাতা- রাবেয়া বেগম, সাং- তেলীগ্রাম, থানা- ফুলবাড়ীয়া, জেলা- ময়মনসিংহের নিকট থেকে চোরাই মোবাইল হিসেবে অল্পদামে ক্রয় করেছে। ১নং আসামীর দেওয়া তথ্য মতে এ ইউনিটের সাইবার ক্রাইম সেল উন্নত তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ২নং আসামীর বর্তমান অবস্থান সনাক্ত করে ইং ২৫/০৩/২০২৪ তারিখ ২২.১৫ ঘটিকার সময় ময়মনসিংহ জেলার ফুলবাড়ীয়া থানাধীন তেলিগ্রাম বাজারস্থ তাইবা টেলিকম নামক দোকানের সামনে হতে ধৃত করে। জিজ্ঞাসাবাদে বর্ণিত ১নং আসামীর নিকট হতে জব্দকৃত মোবাইলের মধ্যে কিছু সংখ্যক মোবাইল বিভিন্ন সময়ে চোরাই হিসাবে ক্রয় করে ৩নং আসামীর নিকট থেকে লক খুলে মূল IMEI পরিবর্তন করে ১নং আসামীসহ এরুপ ব্যবসায়ীর নিকট বিক্রি করে আসছে মর্মে স্বীকার করে। ২নং আসামীর দেওয়া তথ্য মতে এ ইউনিটের সাইবার ক্রাইম সেল উন্নত তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ৩নং আসামীর বর্তমান অবস্থান সনাক্ত করে ময়মনসিংহ জেলার ফুলবাড়ীয়া থানাধীন বাবুগঞ্জ বাজারস্থ ৩নং আসামী মোঃ সাকিব(২১),পিতা- মোঃ খাইরুল ইসলাম, মাতা- মোসাঃ শাহানাজ আক্তার, সাং- বিষ্ণু রামপুর, থানা- ফুলবাড়ীয়া, জেলা- ময়মনসিংহের দোকানে তাকে পেয়ে ২নং আসামীকে সামনে রেখে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করে ৩নং আসামী ২নং আসামীকে চিনে এবং ৩নং আসামী উক্ত মোবাইলের IMEI পরিবর্তন করে দিয়েছে মর্মে স্বীকার করে। ৩নং আসামী আরো জানায় ২নং আসামীসহ একাধিক মানুষের নিকট থেকে মোবাইল সংগ্রহ করে টাকার বিনিময়ে অনলাইনের মাধ্যমে বিভিন্ন Apps/Tools ব্যবহার করে মোবাইল লক খুলে মোবাইলের মূল IMEI পরিবর্তন করে। ধৃত ৩নং আসামীর নিকট হতে মোট ৫০ (পঞ্চাশ) টি বিভিন্ন মডেলের অ্যান্ড্রয়েট মোবাইল ফোন, ০১টি ৩২’’ ইঞ্চি মনিটর, ০১টি উন্নত CPU এবং ০১টি IMEI নাম্বার পরিবর্তন করা যন্ত্র J TAG PLUS জব্দ করা হয়।
ধৃত আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে উপরোক্ত নাম ঠিকানা প্রকাশ করে এবং আসামীদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, ১নং আসামী তার অজ্ঞাত সহযোগিদের সহায়তায় বিভিন্ন বাজার, সমাবেশ এবং জনসমাগম স্থান থেকে কৌশলে মোবাইল চুরি করে ২নং আসামীর নিকট মোবাইলের লক ছাড়িয়ে মূল IMEI পরিবর্তন করার জন্য দেয়। ২নং আসামী ৩নং আসামীর কাছ থেকে অর্থের বিনিময়ে মোবাইলের লক ছাড়িয়ে মূল IMEI পরিবর্তন করে। ১, ২ ও ৩নং আসামীরা উক্ত মোবাইলগুলো বিভিন্ন কৌশলে বিভিন্ন স্থানে ক্রয়-বিক্রয় করে।
ধৃত আসামীগন পরস্পর পরস্পরের যোগসাজসে দীর্ঘদিন যাবৎ দেশের বিভিন্ন স্থান হইতে মোবাইল চুরি করে এবং চোরাই মোবাইলগুলো হেফাজতে রেখে বিভিন্ন লক ছাড়ানোর Apps/Tools ব্যবহার করে মোবাইলের লক খুলে মূল IMEI পরিবর্তন করে ক্রয়-বিক্রয় করে আসছে। ০৩নং আসামী জানায় সে প্রতিটি মোবাইলের লক ছাড়ানো এবং মূল IMEI পরিবর্তনের জন্য মোবাইলের উপর ভিত্তি করে ২,০০০/- থেকে ১০,০০০/- টাকা পর্যন্ত নিয়ে থাকে।
১,২ ও ৩নং আসামীদের কাছ থেকে জব্দকৃত সর্বমোট ৫৫ (পঞ্চান্ন) টি চোরাই মোবাইল, ০১ টি CPU, ০১ টি মনিটর এবং ০১ টি J TAG PLUS যন্ত্রের সর্বমোট আনুমানিক মূল্য ৯,৩০,০০০/- (নয় লক্ষ ত্রিশ হাজার টাকা) মাত্র।
পরবর্তীতে ধৃত আসামীগনের বিরুদ্ধে মুক্তাগাছা থানার মামলা নং-২৪, তারিখ- ২৬/০৩/২০২৪ খ্রিঃ, ধারা-পেনাল কোডের ৩৭৯/৪১৩/৪১১ ধারায় নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়।