পাগড়ী প্রদান অনুষ্ঠান সম্পন্ন,দেড় বছরে হাফেজ হলেন ৯ বছরের শিশু মাহিন
আনিছুর রহমান হীরু
কুতুবদিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি।
মাত্র দেড় বছরে পবিত্র কোরআন শরীফ হিফজ সম্পন্ন
করে তাক লাগিয়ে দিয়েছে ৯ বছর বয়সী শিশু মোঃ মাহিন উদ্দিন। তাঁর বাড়ি চট্টগ্রাম জেলার সাতকানিয়া থানার মলেয়াবাদ গ্রামে। মাহিনের এমন কৃতিত্বে খুশি তাঁর মা-বাবা ও স্বজনরা। শিক্ষকদের সঠিক দিক নির্দেশনা আর স্নেহ ভালাবাসায় অল্প সময়ে কুরআনের হাফেজ হতে পেরেছে বলে জানায় মাহিন। ভবিষ্যতে একজন বড় আলেমে দ্বীন হয়ে দেশ ও মানুষের খেদমত করার স্বপ্ন এ হাফেজের।
কুতুবদিয়া থানায় কর্মরত (ডিএসবি) সহকারী উপ-পুলিশ পরিদর্শক মহি উদ্দিনের ছেলে মোঃ মাহিন উদ্দিন। বাবার চাকুরীর সুবাদে হযরত হাসানাইন (রাঃ) হিফজুল কুরআন মাদ্রাসা, সাতকানিয়া থেকে ২০২৩ সালে ফেব্রুয়ারী মাসে কুতুবদিয়া বড়ঘোপ মাতবর পাড়া আদর্শ হাফেজিয়া মাদ্রাসায় ভর্তি হন মাহিন উদ্দিন। এরপর মাত্র দেড় বছরে পবিত্র কুরআন হিফজ সম্পন্ন করেন।
এ উপলক্ষে সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারী) রাত ৯ টায় বড়ঘোপ মাতবর পাড়া ইসলামী ছাত্র সংঘে’র উদ্যােগে এক তাফসীরুল কুরআন মাহফিল ও পাগড়ী প্রদান অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে হাফেজ মাহিন উদ্দিনসহ মোট ১২ জন হাফেজকে পাগড়ী এবং সনদ প্রদান করা হয়।
জানা গেছে, সাতকানিয়া রসুলাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে দ্বিতীয় শ্রেণি শেষ করার পর মাহিনকে সাত বছর বয়সে নাজরানা বিভাগে ভর্তি করান তার বাবা। এরপর কোরআন সবক নেয়। পরে, ৯ বছর বয়সে কুতুবদিয়া বড়ঘোপ মাতবর পাড়া আদর্শ হাফেজিয়া মাদ্রাসায় পবিত্র কোরআন শরীফ হিফজ সম্পন্ন করেন। প্রতিভাবান হাফেজ মাহিন বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক অনুষ্ঠানেও কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখেন। এর মধ্যে কুতুবদিয়া হুফ্ফাজুল কুরআন ফাউন্ডেশন (দশ) গ্রুপে বিশেষ স্থান অর্জন করে। একইভাবে চট্টগ্রামের পটিয়ায় বাংলাদেশ তাহফীজুল কোরআন সংস্থা প্রতিযোগিতায় ২য় গ্রুপে ৩য় বিভাগে এবং কক্সবাজার জেলার মহেশখালীধীন হাফেজ আইয়ুব আলী (রহঃ) ফাউন্ডেশন প্রতিযোগিতায় ২য় গ্রুপে ৩য় বিভাগে উত্তীর্ণ হন।
শিশু হাফেজ মাহিন উদ্দিনের বাবা মহি উদ্দিন বলেন, ‘আমার অনেক দিনের ইচ্ছা আমার ছেলে কোরআনের হাফেজ হয়ে একজন বড় আলেম হবে। আল্লাহর অশেষ রহমতে মাত্র দেড় বছরে আমার ছেলে পবিত্র কোরআনের হাফেজ হয়েছে। আপনারা আমার ছেলের জন্য দোয়া করবেন। সে যেন বড় হয়ে ইসলামের খেদমত করতে পারে’।
বড়ঘোপ মাতবর পাড়া আদর্শ হাফেজিয়া মাদ্রাসার
প্রধান শিক্ষক হাফেজ মোরশেদ আলম বলেন, ‘মহাগ্রন্থ আল কোরআনের অলৌকিক মুজিজায় এমন ঘটনা বিশ্বে প্রায় ঘটেছে। আলহামদুলিল্লাহ আমাদের শিক্ষার্থী মাহিন মাত্র দেড় বছরে পবিত্র কোরআনের হিফজ সম্পন্ন করেছেন। আমরা তার সাফল্য কামনা করি। তবে কোরআন শরীফের হিফজ সম্পন্ন করার বিষয়টি মোটেও সহজ নয়। বরং এর পেছনে শিক্ষক থেকে শুরু করে বাবা মায়ের অনেক চেষ্টা শ্রম ও আত্মত্যাগ আছে। একজন কোরআনে হাফেজ আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয়। তিনি মহান আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া জ্ঞাপন করেন এবং আল্লাহ যেন শিশু হাফেজ মাহিন কে দীনের জন্য কবুল করুন।