জাতীয় সরকারের অধীনে একটি অবাধ,সুষ্ট ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিন, পীর সাহেব চরমোনাই।
বিশেষ প্রতিবেদক:
১৬ ই সেপ্টেম্বর রোজ: শনিবার কক্সবাজার পাবলিক হল ময়দানে ইসলামী আন্দোলনহ বাংলাদেশ কক্সবাজার জেলা শাখার উদ্যোগে আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে, মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম (পীর সাহেব চরমোনাই) বলেন,বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের নাগরিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। দেশে এখন জনগণ নিজের ভোট নিজে দিতে পারে না। জনগণ আজ তাদের ভোটের অধিকার,
ভাতের অধিকার থেকে বঞ্চিত। দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব আজ সংকটাপন্ন। জনগণ তাদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। দুর্নীতিবাজ, লুটেরা এবং
বিদেশী তাবেদার শক্তি দেশের মানুষকে জিম্মি করে রেখেছে। উন্নয়নের নামে দেশে দুর্নীতির মহোৎসব চলছে। জনগণকে নির্যাতন করলে কোন বিচার
হয় না। প্রশাসনের সর্বত্র একচ্ছত্র দলীয়করণ চলছে।
প্রধান নির্বাচন কমশিনারের পদত্যাগ ও ব্যর্থ নির্বাচন কমিশন বাতিল, দ্রাব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিরোধ এবং সংসদ ভেঙে দিয়ে জাতীয় সরকারের অধীনে একটি
সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন, দ্রব্যমূল্যের চরম ঊর্ধ্বগতি রোধ করে জনদুর্ভোগ লাগব, রাষ্ট্রের সকল স্থর দুর্নীতিমুক্ত করন, দ্রুত রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান,
অশ্লীলতা বেহায়াপনামুক্ত ও পরিবেশবান্ধব পর্যটন নগরী গড়ে তোলা, নিরাপদ, পরিচ্ছন্ন ও জলাবদ্ধতামুক্ত কক্সবাজার শহর বিনির্মাণ, কক্সবাজারকে
মাদক, সন্ত্রাসী, চুরাকারবারী ও ইয়াবা মুক্তকরুন।
পীর সাহেব চরমোনাই আরে বলেন, বিগত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ দেশকে নরকে পরিণত করেছে। কোথাও শান্তি, স্বস্থি ও নেই। শুম-খুনের আতঙ্কে মানুষ
উদ্বিগ্ন ও উৎকণ্ঠিত। আওয়ামী লীগ ছাড়া সকল রাজনৈতিক দলের দাবি হচ্ছে সরকারের পদত্যাগ। তাই অনতিবিলম্বে জাতীয় সরকারের দাবি মেনে নিয়ে
একটি সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য, নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।
সরকার মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নের নামে দেশে বাকশাল কায়েম করেছে। আইন বিভাগ, বিচার বিভাগ, চিকিৎসা বিভাগ, নির্বাচনী ব্যবস্থা,
শিক্ষাঙ্গণসহ সবকিছু ধ্বংস করে দিয়েছে। মাদরাসা ছাত্র
হাসিনার পদত্যাগ এখন গণদাবিতে পরিণত হয়েছে। পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, সরকারের নতজানু পরাষ্ট্রনীতির কারণে মজলুম জনগোষ্ঠী রোহিঙ্গাদের
সমস্যা সমাধান করতে হয়েছে। তিনি অবিলম্বে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করার দাবি জানান।
সমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তব্যে কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন বলেন, জাতীয় সরকার বা নিরপেক্ষ সরকার যে নামেই হোক
একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হলে দেশ অস্তিত্ব সংকটে পড়বে, দেশ ধ্বংস হয়ে যাবে। নির্বাচন নিয়ে বিদেশী হস্তক্ষেপের দায়ভার শেখ
হাসিনার। তাদের ২০১৪ ও ২০১৮ সালে প্রহসনের নির্বাচনের কারণেই বিদেশীরা আমাদের দেশে হস্তক্ষেপ করার সাহস পাচ্ছে। আওয়ামী লীগ আবার
ক্ষমতায় আসলে দেশ ধ্বংস হবে। দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হবে। মানবতা ভুলুন্ঠিত হবে। অনিবার্য সংঘাত এড়াতে সরকারকে দ্রুত
পদত্যাগের ঘোষণা দিতে হবে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্তমান ক্ষমতাসীনদের অধীনে হবে না, হতে দেয়া হবে না। সরকার সসম্মানে পদত্যাগ না
করলে পদত্যাগে বাধ্য করা হবে।
সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আন্দোলনের কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক ও চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি আলহাজ্ব জান্নাতুল ইসলাম
বলেন, রক্তে কেনা স্বাধীনতাকে অর্থবহ করতে অনতিবিলম্বে জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। প্রশাসনকে
জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে। সুষ্ঠু রাজনৈতিক সংস্কৃতি তৈরী করতে হবে। দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতিতে মানুষ যখন দিশেহারা। সরকারের
মন্ত্রী-এমপিরা আজ সরাসরি সিন্ডিকেটের সাথে জড়িত। এসব সিন্ডিকেটের কাছে সাধারণ মানুষ আজ অসহায়।
সমাবেশে বক্তারা অবিলম্বে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান ও কক্সবাজারের যে স্থানীয় দাবিগুলো উপস্থাপন করা হয?েছে তা বাস্তবায়নের দাবি জানান।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কক্সবাজার জেলা শাখার সংগ্রামী সভাপতি মাওলানা মোহাম্মদ আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশ পরিচালনা করেন
আন্দোলনের জেলা সেক্রেটারী মাওলানা ফরিদুল আলম ও জয়েন্ট সেক্রেটারী প্রভাষক রাশেদ আনোয়ার, জেলা সহ সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ শোয়াইব
এর উদ্বোধনী আলোচনার মধ্য দিয়ে সমাবেশের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলন বাংলােদশে বাংলাদেশের
কেন্দ্রীয় সদস্য ও চট্টগ্রম মহানগরীর সেক্রেটারী আলহাজ্ব আল মুহাম্মাদ ইকবাল, জাতীয় ওলামা মশায়েখ আইম্মা পরিষদের কেন্দ্রীয় সদস্য আল্লামা ফরিদ
উদ্দীন আল মোবারক। আন্দোলনের জেলা উপদেষ্টা ডঃ মোহাম্মদ আমিন, জাতীয় শিক্ষক ফোরামের জেলা সভাপতি মুহাদ্দিস মাওলানা আমিরুল
ইসলাম, শ্রমিক আন্দোলন জেলা সভাপতি আলজাজ্ব হাবিবুর রহমান কন্ট্রাক্টর, ইসলামী যুব আন্দোলন এর জেলা সভাপতি মাওলানা নুরুল ইসলাম
আজিজী, ছাত্র আন্দোলন এর জেলা সভাপতি মুহাম্মদ জুনাইদুল ইসলামসহ কেন্দ্রীয়, জেলা ও উপজেলা নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।