প্রবাসী ৪ছেলে, বাবার ঠিকানা কিশোরগঞ্জ নিরাপদ বৃদ্ধাশ্রমে

প্রবাসী ৪ছেলে, বাবার ঠিকানা কিশোরগঞ্জ নিরাপদ বৃদ্ধাশ্রমে

মো আরাফাত আনোয়ারা (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি

মোঃ আব্দুল রহিম। বয়স ৬২ বছর। জীবন যুদ্ধের  একজন পেশাদার রিক্সা চালক।রিক্সা চালিয়ে মানুষ করে ছিল চার সন্তান। চার সন্তান এখন প্রবাসী।প্রবাসী ছেলে সেই বৃদ্ধ বাবার মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই নিজ ঘরে। শেষ ঠিকানা হয়েছে কিশোরগঞ্জের নিরাপদ বৃদ্ধাশ্রমে!

জানা যায়, মোঃ আব্দুর রহিমের বাড়ী চট্টগ্রামে আনোয়ারা উপজেলায় বৈরাগ ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের নেওয়াজ তালুকদার বাড়ির মৃত্যু আব্দুল করিমের ছেলে। আব্দুল রহিমের মোঃ জাহাঙ্গীর, মোঃ আলমগীর, মোঃ সাদ্দাম, মোঃ ইমরান
চার জনের প্রবাসী ছেলে রয়েছে।

নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক এলাকাবাসী জানান, আব্দুল রহিমে বৃদ্ধাশ্রমের দেওয়ার এলাকার সচেতন মহলের মাঝে তীব্র প্রতিবাদ সৃষ্টি হয়েছে।সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুক এই বিষয়টি নিয়ে সারা বাংলাদেশ নিন্দা ঝড় ওঠেছে। আব্দুল রহিম এলাকায় ভাল পরিচিত মুখ। মসজিদে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে। জুমার দিন মসজিদের ইমাম সাহেব এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন। রিক্সা চালিয়ে চার সন্তানকে মানুষ করেছে।সেই সন্তান এখন প্রবাসী গেছে লাখ লাখ টাকা মালিক হয়েছে।সেই বৃদ্ধ বাবা বৃদ্ধাশ্রমে দিয়েছে। বিষয়টি আমাদের এলাকায় জন্য লজ্জার বিষয়।

বায়তুল কুরআন জামে মসজিদের ইমাম মোঃ জাহাঙ্গীর আলম আল-কাদেরি জানান, আব্দুল রহিম মসজিদের একজন নিয়মিত মুসল্লি। ওনাকে বৃদ্ধাশ্রমের দেওয়া বিষয়টি শুনে আমার খুব খারাপ লেগেছে। আমি জুমার নামাজের সময় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছি। ওনার পরিবারের ছেলেদের সাথে যোগাযোগ করেছি। ওনারা আমার কথা শুনে বৃদ্ধাশ্রম থেকে ওনার বাবা আব্দুল রহিমকে নিয়ে আসার জন্য ৩ জন লোক পাঠাচ্ছে।

কিশোরগঞ্জের নিরাপদ বৃদ্ধাশ্রমের প্রতিষ্ঠাতা মোঃ সাজেদুর রহমান সাজু জানান, আনোয়ারা উপজেলায় বৈরাগ ইউনিয়নের থেকে নিরাপদ বৃদ্ধাশ্রমের মোঃ আব্দুল রহিম নামে এক নতুন অতিথি এসেছে। ওনার চার সন্তান আছে সবাই প্রবসী। রহিম চাচার ২য় ছেলে মোঃ আলমগীর বৃদ্ধ বাবাকে নিয়ে আমার কাছে এসেছে। ওনি জানান ওনার বাবা একজন মানসিক ভারসাম্যহীন। বাসার জিনিসপত্র ভাংচুরসহ  সবার ওপর ঝগড়া মারামারি করতেছে। তারা নিরুপায় হয়ে ৩ মাসের জন্য ওনার বাবাকে আমার কাছে রেখে গেছে।সম্প্রতি বিষয়টি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হলে আনোয়ারা থেকে লোকজন আমার সাথে যোগাযোগ করেছে। ওনাকে নিয়ে রহিম চাচাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য আসতেছে।

বৈরাগ ইউনিয়নের ৯নং ওযার্ডের ইউপি সদস্য মুসা তালুকদার বলেন, আমার কাছ থেকে একটা প্রত্যয়ন  পত্র নিয়েছে ওনার বাবাকে ইন্ডিয়া চিকিৎস কথা বলে গতকাল শুনলাম তার বাবাকে বৃদ্ধাশ্রমে দিয়ে আসছে বিষয় অনেক খারাপ লাগলো।

বৈরাগ ইউপি চেয়ারম্যান নোয়াব আলী জানান, স্থানীয় আমাকে ফোন দিয়েছে বৃদ্ধ বাবাকে নাকি ছেলেরা বৃদ্ধাশ্রমে দিয়েছে। খবর নিয়ে জানতে  পেরেছি ওনাকে বাড়িতে আনা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *