সরইতে ব্লাস্ট’র সংক্রমণে নষ্ট হয়েছে সোনালী স্বপ্ন, দিশেহারা কৃষক আব্দুল গনি
(বিশেষ প্রতিনিধি)
বান্দরবানের লামা উপজেলার ৫নং সরই ইউনিয়নে আধা পাকা ধানে ব্লাস্ট’র সংক্রমণে নষ্ট হয়ে গেছে সোনালী স্বপ্ন। অনেক কষ্টে চাষ করা জমির ধান চিটা ও নষ্ট হওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক আব্দুল গনি।
উফসি-২৮ জাতের ধান চিটা হওয়াতে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। তবে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের রোগ প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কৃষি বিভাগ। অন্যদিকে কৃষকদের এই আপদকালীন সময়ে কৃষি অফিসের কোন কর্মকর্তা মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের পাশে থেকে পোকার আক্রমণ থেকে ধান রক্ষার্থে কোন পরামর্শ দিচ্ছেন না বলে দাবি স্থানীয় কৃষকদের।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, উপজেলার ৫নং সরই ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের কবির মেম্বার পাড়া এলাকায় বোরো মৌসুমে এবছর ফলনশীল হাইব্রিড জাতের বোরো ধানের প্রচুর আবাদ হয়েছে। পাশাপাশি ফলন ভালো হওয়ার আশায় উফসি-২৮ জাতের ধানের আবাদ করেন কৃষক আব্দুল গনি। যেসব জমিতে উফসি-২৮ জাতের ধান রোপণ করা হয়েছে, সেখানে ধানের শিষ আসার সাথেই তা পুড়ে চিটা ও নষ্ট হয়ে যায়। অসহায় কৃষক আব্দুল গনি ব্যাংক ও বিভিন্ন জনের কাছথেকে ঋন নিয়ে প্রায় ১ একর ৬০ শতক জমিতে চাষ করেন। তার প্রায় লাখ টাকার সোনালী স্বপ্ন ব্লাস্ট’র আক্রমণে নিমিষেই শেষ (সব ধান নষ্ট হয়ে যায়) হয়ে যায়। বর্তমানে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক আব্দুল গনি দিশেহারা হয়ে মানবতার দিন কাটাচ্ছে।
এদিকে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক আব্দুল গনি বলেন, আমি খুবই অসহায়। কোন রকম কাজ-কর্ম করে পরিবার চালায়। এবছর ব্যাংক ও বিভিন্ন জনের কাছথেকে ঋন নিয়ে একজনের কাছথেকে ৪কানি জমি বর্গা নিয়েছি। সে জমিতে উফসি-২৮ জাতের ধান রোপণ করি। বর্তমানে জমির সব ধান ব্লাস্ট রোগে চিটা ও নষ্ট হয়ে গেছে। একটা ধানও ঘরে তুলতে পারবো না। কিভাবে বাঁচবো সেই চিন্তায় আছি। অন্যদিকে ঋণের বুঝা কি ভাবে সুদ করবে সে চিন্তায় দিন কাটাচ্ছে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক আব্দুল গনি। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক আব্দুল গনি মানবিক বিবেচনায় সাহায্য সহযোগিতায় কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এবিষয় সরই ১ ও ৫নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সহ স্থানীয় একাধিক কৃষক’রা বলেন, কৃষক আব্দুল গনি খুবই অসহায়। তিনি ঋন নিয়ে একজনের কাছথেকে জমি বর্গা নিয়ে চাষ করে। সে জমি গুলোতে উফসি ২৮ জাতের ধান চাষ করেন তিনি। এখন আমরা এসে দেখতে পায় তার চাষ করা জমির সবগুলো ধান চিটা ও নষ্ট হয়ে গেছে। কৃষক আব্দুল গনির পক্ষথেকে উপজেলা প্রশাসন ও মন্ত্রী মহোদয়ের মানবিক বিবেচনায় সুদৃষ্টি কামনা করেছেন তারা।
এ ব্যাপারে লামা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বলেন,
উফসি-২৮ ও ২৯ জাতের ধানে ব্লাস্টের সংক্রমণ বেশি হয়।আমরা কৃষকদের এ জাতের ধান লাগাতে নিরুৎসাহিত করি। দিনে তাপমাত্রা বেশি, রাতে ঠান্ডা ও সকালে শিশির পড়ার কারণে ব্লাস্টের সংক্রমণ বেশি হয়ে থাকে। যে সব জমিতে ব্লাস্ট রোগ হচ্ছে, সেসব জমির ধান চিটা ও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ব্লাস্ট রোগ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা কৃষকদের ছত্রাকনাশক ঔষধ স্প্রে করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক যাতে সরকারি প্রণোদনা পায় সে বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ’কে জানানো হবে বলেও জানান তিনি।