মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা

মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা

মো আরাফাত আনোয়ারা (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি

চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় শশুর বাড়ির লোকজনের নির্যাতনের স্বীকার হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে যায় রাশেদা বেগম (৩৫) নামের এক পোশাক শ্রমিক। চিকিৎসা শেষে ব্যবস্থাপত্রে থানায় অভিযোগের সিল মারতে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মেডিকেলের আউট সোর্সিং টিকেট ক্লাক কর্মচারীর হিজবুল্লাহ বিরুদ্ধে। তবে বিষয়টি মেডিকেলের এই কর্মচারী স্বীকার করলেও তিনি বলেন “টাকা আমাকে খুশী হয়ে দিয়েছিলেন মহিলাটি”

জানা যায়, তিন সন্তানের জননী রাশেদা বেগমের স্বামী আবদুর রহিম দীর্ঘদিন ধরে তাদের দেখবাল না করে অন্যত্র বিয়ে করে ভাড়া বাসায় থাকে। সে সুযোগে স্বামীর পরিবার রাশেদা বেগম এবং তার সন্তানদের উপর নির্যাতন করে এবং বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। সেই থেকে রাশেদা খানম কেইপিজেডে চাকরি করে ছেলেমেয়েদের পড়াশোনাসহ যাবতীয় খরচ বহন করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার (১৭ মার্চ) স্বামীর পরিবার কর্তৃক নির্যাতনের শিকার হয় সে।

এবিষয়ে রাশেদা বেগম বলেন, আমার বিয়ে হয়েছে ১৯ বছর, ৬-৭ বছর আগে আরেকটা বিয়ে করে সে অন্য জায়গা চলে যায়। ঘটনার দিন আমার শশুর বাড়ির লেকজন আমাকে মারধর করে আমার বেতন নিয়ে পেলে এবং স্বামীর ভিটায় যেতে বারণ করে। তারপর আমি আমার সেলাইমিশন বিক্রি করে হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার পর কর্মরত আউট সোর্সিং টিকেট ক্লাক কর্মচারীর হিজবুল্লাহকে পঞ্চাশ টাকা দিলে সে রাগ দেখিয়ে বেশি টাকা দাবি করলে, তাকে পাঁচশ টাকা দেওয়ার পর দু’শ টাকা ফেরত দেয়। আমি মুক্তিযোদ্ধার মেয়ে পরিচয় ও আমার অভাবের কথা বলার পর আরো একশ টাকা ফেরত দেয়। আমি পরে জানতে পারি জরুরি বিভাগের সরকারি নির্ধারিত জনপ্রতি ৩টাকা ফি দিতে হয়। বিষয়টি হিযবুল্লাহ কে জানালে সে বলে মারামারির ঘটনায় পুলিশকে আমাদের নানান তথ্য দিতে হয়। যার কারণে এই ক্ষেত্রে খরচ দিতে হবে।

টাকা নেওয়া বিষয়টির সত্যতা যাচাই করতে হাসপাতালে গিয়ে মেডিকেলের আউট সোর্সিং টিকেট ক্লাক কর্মচারীর হিজবুল্লাহ’র সাথে কথা হলে ডাঃ সাদিয়া তাবাসসুম ও হাসপাতালের কর্মচারীদের উপস্থিতিতে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, “দু’শ টাকা নিয়েছি সত্য তবে জোর করে নিয়নি ওনি খুশি হয়ে প্রথমে একশ টাকা পরে আরোও একশ টাকা দিয়েছেন”।

এবিষয়ে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ সাদিয়া তাবাসসুমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, টাকা নেওয়ার বিষয়টি যেহেতু স্বীকার করেছেন সেহেতু বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃ পক্ষকে জানানো হবে।

আনোয়ারা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মীর্জা মুহাম্মদ হাছান জানান, শশুর বাড়ির লোকজন কর্তৃক নির্যাতনের শিকার হওয়ার বিষয়ে একটা অভিযোগ পেয়েছি বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *